প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় বীমা দিবস-২০২০ এর উদ্বোধন করেন এবং এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত আয়োজিত জাতীয় বীমা দিবস-২০২০ এর প্রতিপাদ্য হচ্ছে : ‘বীমা দিবসে শপথ করি, উন্নত দেশ গড়ি’।
মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসাবে সেনা কল্যাণ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ে অবস্থিত মুজিব কর্নারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের উপর নির্মিত একটি ‘রিলিফ ভাস্কর্য’ উন্মোচন করা হয়।
ভাস্কর্যটি উন্মোচন করেন সেনা কল্যাণ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, এনডিসি,পিএসসি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সেনা কল্যাণ ইন্সুরেন্স এর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শফিক শামীম,পিএসসি (অব.)সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তা ও ব্রাঞ্চ প্রধানগন।
ভাস্কর্য উন্মোচন চেয়ারম্যান মহোদয় ‘বঙ্গবন্ধু মুজিব কর্নারে’ অবস্থিত পাঠাগার পরিদর্শন করে, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কন্যা শেখ হাসিনার লেখা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বই ও সংকলন কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার হাতে তুলে দেন ।
সেনা কল্যাণ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড দেশের সর্বকনিষ্ঠ জেনারেল ইন্সুরেন্স কোম্পানি হিসাবে ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে আত্মপ্রকাশের পর অত্যান্ত সুনামের সাথে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।
১। ইভাকুয়েশন ড্রিল এর উদ্দেশ্য হচ্ছে কোন ভবনে অগ্নি দূর্ঘটনা বা অন্য যে কোন দূর্যোগ মূহুর্তে অতি অল্প সময়ে জরুরী নির্গমন পথে নিরাপদ ও শৃঙ্খলার সাথে বের হয়ে নিরাপদ স্থানে সম্মিলিত অবস্থান নেয়ার অনুশীলন। অন্যভাবে বলা যায় দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ভবন থেকে আটকে পড়া লোকজনকে শৃঙ্খলাবদ্ধ ও পদ্ধতিগতভাবে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নাম ইভাকুয়েশন বা লোক অপসারণ।
ইভাকুয়েশনপ্লান
২। ইমারতের ধরণ এবং অবকাঠামোর উপর ভিত্তি করে বিপদগস্ত সমস্ত লোক অপসারণ করার জন্য অবশ্যই বিভিন্ন রকম পরিকল্পনা পূর্ব থেকেই গ্রহণ করতে হবে এবং সে পরিকল্পনা অনুসারে লোক অপসারণ অনুশীলন ও মহড়া করতে হবে যাতে বাস্তব ক্ষেত্রে এর প্রয়োগ ফলপ্রসূ হয়। কোন ভবনে অগ্নি দূর্ঘটনা বা অন্য যে কোন দূর্যোগ মূহূর্তে জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস কল্পে ইভাকুয়েশন প্লান অতি গুরুত্বপূর্ণ। আটকে পড়া লোকদের নিরাপদে বের করার ধারাবাহিক পদ্ধতির বিবরণ নিম্নে দেয়া হল, যা সকলকে অনুসরণ করতে হবেঃ
ক। অগ্নিকান্ড বা দূর্যোগ মুহূর্তের শুরুতেই স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসকে সংবাদ দিতে হবে। বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ বন্ধ করতে হবে। এ কাজটি করার জন্যও একজন দায়িত্বশীল প্রতিনিধি থাকবে।
খ। ফায়ার এলার্ম বাজানো হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে। ফায়ার এক্সটিংগুয়েসার এর সাহায্যে আগুন নিভানোর চেষ্টা করতে হবে। এজন্য পূর্ব থেকেই ফায়ার এক্সটিংগুয়েসার এবং অগ্নি নির্বাপক দল প্রস্তুত রাখতে হবে।
গ। যে ফ্লোরে অগ্নিকান্ড সংঘঠিত হয়েছে সেই ফ্লোরের লোকজন সর্বপ্রথম বের হয়ে আসবে এবং পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে অন্যান্য ফ্লোরের লোকজন বের হয়ে আসবে। কোনক্রমেই উপর থেকে নিচে লাফ দেওয়া যাবে না। যে সিঁড়ির কাছাকাছি আগুন থাকবে তা ব্যবহার করা ঠিক হবে না, কারণ ধোঁয়া ও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনাসহ মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।
ঘ। ভবনের জন্য পূর্ব নির্ধারিত অগ্নি নির্বাপক দল, উদ্ধারকারী দল ও প্রাথমিক চিকিৎসাকারী দল নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবে। জরুরী অবস্থায় নিরাপত্তা কর্মীদের অবশ্যই টর্চ বা ইমারজেন্সি লাইট ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, জরুরী অবস্থায় ভবনের ভিতর অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে।
ঙ। ইভাকুয়েশনের সময় নিকটবর্তী সিড়ি ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথমে গর্ভবতী মহিলা, বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তি, বিকলাঙ্গ ব্যক্তি, মহিলা তারপর পুরুষদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে
বের হওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
চ। অগ্নি কান্ড বা দূর্যোগের সময় লিফট ব্যবহার করা যাবে না। জরুরী অবস্থায় কেউ কাউকে ওভারটেক করা ঠিক হবে না, তাতে পড়ে গিয়ে পদদলিত হবার সম্ভাবনা থকে। এজন্য যে আগে আছে তাকে আগেই যেতে দিতে হবে।
ছ। ইভাকুয়েশনের সময় অহেতুক হুড়োহুড়ি,
দৌড়াদৌড়ি বা চিৎকার চেচামেচি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সিঁড়ি/ইমারজেন্সি এক্সিট দিয়ে নামার সময় শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে আস্তে আস্তে নামতে হবে।
জ। ব্যক্তিগত বা গুরুত্বপূর্ণ বা মূল্যবান জিনিসিপত্র সংগ্রহের জন্য অযথা সময় নষ্ট করা যাবে না।
ঝ। যেহেতু আগুন উর্ধমুখী, যে তলায় আগুন লেগেছে সে তলার লোক প্রথম নামবে। যেমন; তিন তলায় আগুন লাগলে সেখানকার লোক প্রথম নামবে। তারপর তার উপর দিকের লোক নামবে যথা- চার,
পাঁচ,
ছয়তলা ইত্যাদি। এভাবে উপর তলার সব লোক নামার পর দোতালা এবং প্রথম তালার লোক বের হবে সর্বশেষে।
ঞ। ইভাকুয়েশনের শেষ পর্যায়ে এসেম্বলী পয়েন্টে সমাবেত হতে হবে এবং মাস্টারিং করে অনুপস্থিত ব্যক্তির সংখ্যা নির্ণয় করতে হবে।
টেলিফোনঅপারেটরেরদায়িত্ব
৩। টেলিফোন অপারেটর কর্তৃক কোন অগ্নি দূর্ঘটনা সংবাদ প্রাপ্তির পর যথাযথ ভাবে তথ্য গ্রহণ করতঃ অনতিবিলম্বে ক্রাশটেন্ডার
/ ডমেস্টিক টেন্ডার অগ্নি দূর্ঘটনা স্থলে পাঠানোর ব্যবস্থা করিবে । টেলিফোন ইনডেক্স অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে সকল নাম্বারে ফোন করে বিপদকালীন পরিস্থিতি অবহিত করবেন।
মনিটরদ্বারাপানিদিয়েফায়ারফাইটিংকরারপদ্ধতি
৪। মনিটর দ্বারা পানি দিয়ে ফায়ার ফাইটিং করার সময় ফায়ার লিডার/প্যানেল অপারেটর নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করবে:
৫. পুলিশ স্টেশন (তেজগাঁও) ০১৭১৩-৩৭৩১৮০, ৯১১৯৪৪৪, ৯১১৯৪৬৭
৬. পুলিশ স্টেশন (গুলশান) ০১৭১৩-৩৭৩১৭১
৭. ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ৭১৭৬৮১২, ৮১১২৫৫৬ (এম্বুলেন্স)
৮. র্যাব – ২ ০১৭৭৭-৭১০২৯৯, ০২-৮১৪২৪৮৩
৯. র্যাব – ৩ ০১৭৭৭-৭১০৩৯৯, ০১৭৭৭-৭১০৩০০
১০. বিদ্যুৎ অফিস (তেজগাঁও) ০১৭৩০-৩২০৩০৫ (অভিযোগ)
১১. ওয়াসা (মহাখালী) ৯৮৯৯৩৯৯
১২. তিতাস গ্যাস (বাড্ডা জোন -৪) ৮৮১৬৬৬৫, ৮৮২৪৯৯৩
উপসংহার।
১০। যেকোন ধরণের অগ্নি দুর্ঘটনা বা অনুরূপ কার্যক্রমরোধে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রচেষ্টা ও সচেতনতা অত্যান্ত জরুরী এবং এ ব্যাপারে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ন্যূনতম পর্যায়ে রাখতে সম্যক জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা বাঞ্ছনীয়। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলের সজাগ দৃষ্টি, সচেতনতা ও সার্বিক সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে ১৮/০৩/২০২০, বুধবার সেনা কল্যাণ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এর প্রধান কার্যালয়ে মুজিব কর্ণারের উদ্বোধন করেন কোম্পানির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল সাজ্জাদুল হক, বিএসপি, এসইউপি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি । এসময় সেখানে কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রি.জে.শফিক শামীম,পিএসসি (অব). সহ পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন নির্বাহীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মুজিব কর্নারে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন আলোকচিত্রের পাশাপাশি জাতির জনকের উপর রচিত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পুস্তক সংরক্ষণ করা হয়েছে ।